খুলনার পাইকগাছা হাসপাতালে উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন কর্তৃক রোগীর স্বজন চার শ্রমিককে কলম দিয়ে খুঁচিয়ে আহত করার ঘটনায় সহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর ওই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, ওই ঘটনায় ইতোমধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করেছে কমিটি। একইসঙ্গে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত মামুনকে মৌখিকভাবে সব দাপ্তরিক কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৪ জুলাই) সকালে পাইকগাছা হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে পরিবহন শ্রমিকদের কাছ থেকে তদন্ত কমিটির সদস্যরা অভিযোগের বিষয়ে শুনানি করেন।
তদন্ত কমিটির সভাপতি ডা. সুজন কুমার সরকার, ডা. সঞ্জয় কুমার মন্ডল ও আক্তার হোসেন ঘটনার দিন আহত চার শ্রমিকের কাছ থেকে লিখিত জবানবন্দি নেন।
তদন্ত কর্মকর্তা ডা. সঞ্জয় কুমার মন্ডল নিশ্চিত করে জানান, শ্রমিকদের দাবিতে অফিসিয়াল সব কর্মকাণ্ড থেকে উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুনকে মৌখিক নির্দেশে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : কর্মকর্তার বিরুদ্ধে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
অভিযোগে জানা যায়, গত ২০ জুলাই বিকেল পৌনে ৪টার দিকে পাইকগাছা এসডি পরিবহনের ম্যানেজার শহিনুর রহমান আসাদুল সানা নামে এক রোগীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে জরুরি বিভাগে ভর্তি করাতে নিয়ে আসেন। এ সময় জরুরি বিভাগের কক্ষে রোগীর চেয়ারে বসালে উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন রোগী ও তার স্বজনদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। রোগীর স্বজন শ্রমিক নেতা শাহিনুর রহমান প্রতিবাদ করলে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। খবর পেয়ে অন্য শ্রমিক নেতা গোলাম বারী খোকন, নুর আলী, শাহদুল ইসলাম হাসপাতালে এলে তাদের ওপর আবারও হামলা করে কলম দিয়ে খুঁচিয়ে আহত করে।
এ ঘটনা বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত হলে নড়েচড়ে বসে পাইকগাছা হাসপাতাল প্রশাসন। ইতোপূর্বে এই চিকিৎসক আগড়ঘাটা উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে একইভাবে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করে আহত করে এবং চারজন সাংবাদিকসহ পাঁচজনের নামে মামলা করেন।
আরও পড়ুন : স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে দেশের ৯৯ শতাংশ মানুষ : গবেষণা
শ্রমিক নেতারা জানান, উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে যদি কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হয়, অচিরেই তারা ২৬ রুটে গাড়ি বন্ধসহ কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবেন।
তদন্ত কর্মকর্তা ডা. সঞ্জয় কুমার মন্ডল কালবেলাকে বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে এবং প্রত্যক্ষ সাক্ষীদের লিখিত বয়ানের ভিত্তিতে তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নিতিশ চন্দ্র গোলদার অফিসিয়াল কাজে ঢাকায় আছেন, উনি আসার পর আমরা তদন্ত রিপোর্ট পেশ করব এবং তিনিই পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। সে পর্যন্ত উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুনকে সব অফিসিয়াল কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।