বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের পদযাত্রায় হামলার অভিযোগে কোতোয়ালি জোনের এডিসি মুহিত কবির সেরনিয়াবাতসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুর রহমানের আদালতে অ্যাডভোকেট মো. মহসিন মিয়া বাদী হয়ে এ আবেদন করেন।
এ মামলার উল্লেখ্যযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন- লালবাগ জোনের এডিসি শহিদুল ইসলাম, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর রহমান, ওসি অপারেশন নাজমুল হক, ওসি তদন্ত মেহেদী হাসান, এসআই শাহাবুদ্দিন হাওলাদার, কনস্টেবল মাহবুব আলম, আব্দুর রশিদ ও রমজান মোল্লা।
মামলার আবেদনে অভিযোগ করা হয়, গত ১২ সেপ্টেম্বর ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্ট ঢাকা বার ইউনিটি ভোটাধিকার, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এ পদযাত্রার আয়োজন করে। বেলা ১২টার দিকে তারা ঢাকা আইনজীবী সমিতির সামনে থেকে পদযাত্রা নিয়ে সিএমএম কোর্টের দিকে যাচ্ছিল। মেইন রোডে গেলেই পুলিশ তাদের বাধা দেয় এবং অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করে ও অশোভন আচরণ পদযাত্রার সামনে থাকা নারী আইনজীবীরা এর কারণ জানতে চাইলে জিনস প্যান্ট ও গেঞ্জি পরিহিত লোকগুলো নারী আইনজীবীদের বেধড়ক মারধর শুরু করে। এতে কয়েকজন নারী আইনজীবী আহত ও শ্লীলতাহানির শিকার হন। পেছনে থাকা পুরুষ আইনজীবীরা এগিয়ে এলে পুলিশ তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে সিনিয়র আইনজীবীসহ কয়েকজন আহত হন।
আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে আইনজীবীদের গতিরোধ করে হত্যার উদ্দেশ্য আক্রমণ করে তাদের গুরুতর রক্তাক্ত জখম করেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
এর আগে, একই ঘটনায় ১৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ ৬৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। পরে ১৪ সেপ্টেম্বর ওই মামলায় আত্মসমর্পণের পর ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি খোরশেদ আলম ও সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ফারুকীসহ ৪৯ আইনজীবী।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবিতে ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্ট (ইউএলএফ) ঢাকা বার ইউনিট পুরান ঢাকার জজ কোর্ট এলাকায় মিছিল বের করলে সেখানে লাঠিচার্জ করে পুলিশ।
পরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল অভিযোগ করে বলেন, পুলিশি হামলায় প্রায় শতাধিক আইনজীবী আহত হয়েছে। তাদের প্রাথমিকভাবে ঢাকা আইনজীবী সমিতির মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। কয়েকজনকে অন্যান্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বিনা উসকানিতে আইনজীবীদের ওপর এমন হামলা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের একজন সদস্য হিসেবে এবং সুপ্রিম কোর্ট বারের প্রতিনিধি হিসেবে পুলিশি হামলার নিন্দা জানাই।
এই ঘটনার দিন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, মিছিল নিয়ে রাস্তায় অবস্থান নিতে চাইলে আমরা বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের পুলিশ সরে যেতে অনুরোধ করে। কিন্তু তারা জোরপূর্বক মিছিল নিয়ে রাস্তায় বের হওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় আমাদের ৪/৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।