জয় মহন্ত অলক প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও॥ কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে এখন
কামাররা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। কুরবানির পশু জবাই ও মাংস টুকরো করতে
ধারালো অস্ত্রই একমাত্র ভরসা। এ জন্য এগুলো তৈরী এবং পুরানো গুলোতে শান
দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কারিগররা। তাই কাজের ধুম পড়েছে ঠাকুরগাঁওয়ে
সকল কামারি দোকানে। দিন রাত পরিশ্রম করছেন কারিগররা। অথচ বছরের
অধিকাংশ সময়ই এই শিল্পের লোকজন বলতে গেলে প্রায় বেকার সময় কাটান।
উপজেলা গুলোতে কামারদের সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দা,
বঁটি,ছুরি, চাকু তৈরী এবং পুরানো অস্ত্রে শান দিতে তারা এখন দারুন
ব্যস্ত। তবে বছরের প্রায় সময় কাজ না থাকায় এখনকার অনেকেই এ পেশা
ছেড়ে অন্য পেশায় মনোনিবেশ করছেন। ঠাকুরগাঁওয়ে কামার কাজের
চাহিদা কম থাকায় এ পেশা ত্যাক করছেন অনেক পরিবার। এ শিল্পের প্রাধান
উপকরন হল লোহা, ইস্পাত ও কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় কামাররা এখন অর্থ
সংকটে ভুগছেন। প্রতি বছর কুরবানির ঈদের মৌসুমে তাদের ব্যবসা হয়।
আগে ১২০-১৫০ টাকায় এক বস্তা কাঠ কয়লা পাওয়া যেতো। এখন তা বেড়ে
দাড়িয়েছে ২০০-২৫০ টাকায় চামড়ায় তৈরীর ভাতি দিয়ে কয়লার আগুন
জ্বালানোর সময় বাতাস দিতে হয়। ঠাকুরগাঁওয়ে কালিবাড়ী বাজার কামার
শিল্পী দীপেন কর্মকার জানান ২০-২৫ টাকার লোহার দাম এখন বেড়ে হয়েছে
৫০ টাকা। ভাতির দাম ৪ হাজার টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৯ হাজার টাকা।
শ্রমিকদের মজুরি দিন প্রতি ২৫০-৩০০ টাকা পর্যন্ত গুনতে হয়। বছর জুড়ে এ
শিল্পে মন্দা ভাব থাকলেও প্রতি বছর কুরবানির ঈদের আগে এদের কদর বাড়ে
অত্যাধিক। দীপেন কর্মকার জানান, ঈদ মৌসুমে কাজের ব্যস্ততা বেড়ে যায়।
এ ছাড়া ধান ও গম কাটার মৌসুমে কাচি তৈরীতে কিছুটা ব্যস্ততা
বাড়ে বলে একই কথা বললেন অনেক কামার শিল্পিরা। তারা আরো বলেন, এক সময়
লোহার তৈরী দা, বটি, ছুরিসহ বিভিন্ন জিনিস গৃহস্তালির কাজে
ব্যবহার হতো প্রচুর। বর্তমানে কামারের তৈরী লোহার জিনিসের পরিবর্তে
স্টিলের যন্ত্রপাতির ব্যবহার বেড়ে গেছে। অথচ মানুষ সে হারে কামারের তৈরী
জিনিস কিনতে চায় না। ঠাকুরগাঁওয়ে কালিবাড়ী বাজারের দরত চাঁদ বরর্ম
জানান, সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করতে হচ্ছে । বিশেষ করে মসজিদ
ও মাদরাসার চাকু এবং ছোরায় শান দেওয়ার ব্যস্ততা বেড়েছে। এ দিকে
আমাদের তৈরী জিনিষের উপকরণের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্য দিকে এসব
জিনিষের চাহিদাও আগের চেয়ে কমে গেছে। কামার শিল্পের কারিগর পাইকার
ও ব্যবসায়ীরা জানালেন, প্রতি বছর এক ঈদ মৌসুমেই যতো কেনা বেচার
ধুম আর এ থেকে অর্জিত টাকাই সারা বছরের খোরাক যোগায় বলে
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। ঠাকুরগাঁওয়ে কালিবাড়ী বাজারের কামার
শিল্পীদেরও যেনো কথা বলার সময় নেই। কাজের ব্যস্ততায় সময় কাটাছে
কামারদের। অপর দিকে দা, বটি, চাকু, সোরা, চাপাতির পাশা পাশি মাংশ
বানানোর জন্য গাছের গুড়ির চাহিদাও ব্যাপক সো,মিল গুলাতে গুড়ি কিনতে
এখনই ভিড় জমাতে শুরু করেছেন। ১৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে মিলছে
এসব গাছের গুড়ি। সো’’ মিলগুলো ছাড়া লাকড়ির দোকান গুলোতে থাকা
কাঠের খন্ড কিনতে শুরু করেছেন অনেকেই।