ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটির টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ বর্ষের ছাত্র মোঃ হাসিবুল হাসান অন্তর এর হত্যা মামলা রুজু হওয়ার তিন ঘণ্টার মধ্যে মূল আসামি রাহাত সরকারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রাহাতের সাথে জড়িত অন্যান্যদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শনিবার ৪ নভেম্বর বেলা ১২ টায় সাভার মডেল থানায সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মোঃ আসাদুজ্জামান পিপিএম (বার)।
এ সময় তিনি আরো বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে রাহাত ও তার বন্ধুরা ড্যাফোডিল ইউনির্ভাসিটির টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ বর্ষের ছাত্র হাসিবুল হাসান অন্তর এবং একই ইনভারসিটির টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ফয়সাল সিদ্দিকী বাপ্পির মোটরসাইকেলের গতি রোধ করে। এ সময় তারা ফয়সাল সিদ্দিকী বাপ্পীকে এলোপাথাড়ি চড় থাপ্পড় দিয়ে তাড়িয়ে দেয় এবং অন্তরকে অপহরণ করে সাভার মডেল থানাধীন খাগান বউবাজার এলাকার একটি বাগানের ভিতর নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে লোহার রড দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম করে। পরে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে প্রথমে আশুলিয়ায় রাজুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হস্তান্তর করা হয় । পরবর্তীতে তার শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে অন্তরের বাবা উন্নত চিকিৎসার জন্য এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় ০২ নভেম্বর অন্তর এর মৃত্যু হয়।প্রাথমিক জিজ্ঞাসা বাদে হত্যা মামলার মূল আসামি রাহাত সরকার ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বলে জানান তিনি।
এ ঘটনায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটির সহকারি অধ্যাপক ও ডেপুটি প্রক্টর মোঃ বদিউজ্জামান বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় ৩২৩/৩৬৪/৩০২/৩৪ ধারায় একটি মামলা করেন। মামলা নং ০২, তারিখ ২/১১/২০২৩ ইং।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই দিদার হোসেন বলেন, ঢাকা জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার মোঃ আসাদুজ্জামান পিপিএম (বার) মহোদয়ের, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ক্রাইম অপস্ ও ট্রাফিক (উত্তর), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সাভার সার্কেল এবং সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ স্যারদের দিকনির্দেশনে একটি চৌকস টিম নিয়ে গাজীপুর ও সাভারে অভিযান পরিচালনা করে মামলার মূল আসামী রাহাত সরকারকে গাজীপুরের জয়দেবপুর থানা এলাকা হতে আটক করা হয়।
উল্লেখ্য যে গত ২৭ শে অক্টোবর ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটির টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ বর্ষের ছাত্র হাসিবুল হাসান অন্তর ও একই ইউনিভার্সিটির তৃতীয় বর্ষের ছাত্র এমডি ফয়সাল সিদ্দিকী বাপ্পি মোটরসাইকেল যোগে আসার সময় সাভারের খাগান এলাকায় আসলে রাহাত সরকার সহ কয়েকজন তাদের গতিরোধ করে। এ সময় তারা বাপ্পিকে এলোপাথারি মাইরধর করে তাড়িয়ে দিয়ে অন্তরকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে মারধর করে। পরের গত ২ নভেম্বর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অন্তরের মৃত্যু হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্ররা ৩ নভেম্বর খাগান এলাকায় বিক্ষোভ করে প্রায় দুই শতাধিক দোকান ঘর ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের আনে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম, অপস্ ও ট্রাফিক (উত্তর), আব্দুল্লাহিল কাফি পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাভার সার্কেল মোঃ শহিদুল ইসলাম , সাভার মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ দীপক চন্দ্র সাহা পিপিএম সহ উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ।