কুকুরের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করার লক্ষ্যে আইন প্রণয়নের পরিকল্পনা করছে দক্ষিণ কোরিয়া। বর্তমানে শত বছরের এই বিতর্কিত প্রথাটি দেশটিতে স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ না হলেও অবৈধ নয়। রোববার (১৯ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
গত শুক্রবার সরকারি কর্মকর্তা ও পশুঅধিকার কর্মীদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষমতাসীন পিপল পাওয়ার পার্টির নীতিবিষয়ক প্রধান ইউ ইউই-ডং। বৈঠকে তিনি বলেন, কুকুরের মাংস খাওয়া নিয়ে সামাজিক দ্বন্দ্ব ও বিতর্কের অবসান ঘটাতে এটি নিষিদ্ধ করে একটি বিশেষ আইন প্রণয়নের সময় এসেছে। ক্ষমতাসীন দল এই বছর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার জন্য সংষদে একটি বিল উত্থাপন করবে। দ্বিদলীয় সমর্থনের ভিত্তিতেই বিলটি সংসদে পাস হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।
কৃষিমন্ত্রী চুং হোয়াং-কেউন বৈঠকে বলেছেন, আইন পাস হলে সরকার দ্রুতই এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করবে। আর কুকুরের মাংস ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যবসীয়দের সর্বোচ্চ সহায়তা দেবে সরকার।
এর আগে গত সেপ্টেম্বরে কুকুরের মাংস বেচা ও খাওয়া নিষিদ্ধ করতে সংসদে একটি বিল উত্থাপন করেছিল দেশের প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি।
দেশের ফার্স্ট লেডির নামে প্রস্তাবিত আইনটির নাম কিম কিওন হি বিল দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ কোরিয়ায় কুকুরের মাংস বেচা ও খাওয়া নিষিদ্ধ করার পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে আসছেন কিম কিওন হি।
গত আগস্টে এক সংবাদ সম্মেলনে কিম কিওন বলেছিলেন, মানুষ ও প্রাণীদের পাশাপাশি বাস করা উচিত। কুকুরের অবৈধ মাংস সম্পর্কিত সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা উচিত।
কোরীয় উপদ্বীপে কুকুরের মাংস খাওয়া শতাব্দী প্রাচীন প্রথা। তবে গত কয়েক বছর ধরে পশু অধিকারবিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং দেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে কুকুরের মাংস থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে সাধারণ মানুষ।
সাম্প্রতিক বছরে দক্ষিণ কোরিয়ায় কুকুরের খামারের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। এরপরও প্রতি বছর প্রায় ৭ লাখ কুকুর জবাই হচ্ছে।