ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সঙ্গে হামাসের যুদ্ধবিরতির চুক্তির ঘোষণা আজ মঙ্গলবার বিকেলে আসতে পারে বলে জানিয়েছে আলজাজিরা।
এর কিছুক্ষণ আগে ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তির কাছাকাছি রয়েছেন বলে জানান হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়াহ। তার এমন বক্তব্যের পরই এমন তথ্য দিল আলজাজিরা। তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এই চুক্তির বিষয়ে এখনো কিছু জানানো হয়নি।
হামাসের কর্মকর্তা ইজ্জাত আল-রিশক বলেছেন, কাতারের মধ্যস্থতায় হওয়া এই চুক্তির মধ্যে যুদ্ধবিরতি, গাজার সব এলাকায় ত্রাণ সরবরাহ এবং আহত ফিলিস্তিনিদের চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয় থাকবে। জিম্মি ইসরায়েলি নারী ও শিশুদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুদের মুক্তির বিষয় থাকবে বলেও জানান তিনি।
আল-রিশক বলেন, এই চুক্তি নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আলোচনা চলছিল। তবে একপর্যায়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সামনে অগ্রসর হননি।
অবশ্য হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে বন্দিবিনিময় চুক্তি হয়ে গেছে, এমন খবর বেশ কয়েক দিন ধরেই দিয়ে আসছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
সোমবার (২০ নভেম্বর) ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেএএনের বরাতে তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু জানায়, হামাসের সঙ্গে বন্দিবিনিময় চুক্তি করতে সবুজ সংকেত দিয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। এখন তারা হামাসের জবাবের অপেক্ষা করছে। হামাস ইতিবাচক সাড়া দিলেই দুপক্ষের মধ্যে এই ধরনের চুক্তি হবে।
গত শনিবার (১৮ নভেম্বর) মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় সাময়িক যুদ্ধবিরতি নিয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে হামাস, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল। চুক্তির আওতায় হামাস বেশ কয়েকজন জিম্মিকে মুক্তি দেবে। বিনিময়ে পাঁচ দিনের যুদ্ধবিরতি দেবে ইসরায়েল। যদিও পরে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টি অস্বীকার করে।
এর আগে গত সপ্তাহে কাতারের মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি চুক্তির খবর দিয়েছিল রয়টার্স। চুক্তির আওতায় তিন দিনের যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে ৫০ জন জিম্মিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলি হত্যার পাশাপাশি দুই শতাধিক ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস। এরপর হামসকে নিশ্চিহ্নের নাম করে গাজায় নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি হামলায় এরই মধ্যে ১৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
গাজায় হাজার হাজার মানুষ হত্যার প্রতিবাদ এবং যুদ্ধবিরতির দাবিতে বিশ্বজুড়ে প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ বিক্ষোভ-সমাবেশ করলেও তা আমলে নিচ্ছে না ইসরায়েল ও তার পশ্চিমা মিত্ররা।