মোঃ রুহুল আমীন, আত্রাই প্রতিনিধি
ঈদুল আজহার আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। দিন যতই ঘনিয়ে আসছে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার গরুর
সর্ববৃহৎ আহসানগঞ্জ হাট ততই জমে উঠেছে। অনেকে আগেই কোরবানির পশু কেনার পরিকল্পনা করায়
গতবারের এই সময়ের তুলনায় এবার ক্রেতা সমাগম অনেকটা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। তবে অন্যবারের চেয়ে
এবার পশুর দাম তুলনামূলক বেশি বলে ক্রেতারা অভিযোগ করেছেন। দাম বাড়ার পেছনে ভারতীয় গরু না
আসাকে কারণ হিসাবে দেখছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা।
বৃহস্পতিবার গরুর হাট গিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। হাটে গিয়ে দেখা
গেছে, বিপুল সংখ্যক ছোট-বড় মাঝারি আকারের অনেক গরু দিয়ে হাট ভর্তি। গরুর জন্য হাটটি বিখ্যাত
হলেও ছাগলের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো।
জয়সাড়া গ্রামের খামারি মো. ফজলুর ফিজু পাঁচটি ষাঁড় বিক্রির জন্য হাটে এনেছেন। প্রতিটি গরুর দাম
চাচ্ছেন ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা।আরেক খামারি তালেব এনেছেন তিনটি গরু। এই প্রতিবেদককে তিনি
জানালেন, প্রতি বছর তিনি ১৫ থেকে ২০টি ষাঁড় লালন পালন করেন। এবারও তিনি ১৫টির মতো ষাঁড় পালন
করেছেন। গত কোরবানির এক মাস পর তিনি এসব গরু কিনেছেন। একেকটি গরু ২৬ থেকে ২৭ হাজার টাকায়
কিনেছেন।
আলাল নামে আরেক খামারি জানান, অন্যবারের চেয়ে এবার গরু পালতে বেশি খরচ হয়েছে। তাছাড়া গরুর
খাদ্যেরও দাম বেশি। এজন্য এবার গরুর দাম তুলনামূলক বেশি।তিনি জানান, একটি গরু পেছনে বছরে ১০
থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়। তাই প্রতিটি গরু গড়ে ৫৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতে না পারলে পোষাবে
না।
মনিয়ারী গ্রামের রহিমদ্দিন বলেন, ছয় মাস আগে ২৮ হাজার টাকা দিয়ে তিনি একটি গরু কিনেছিলেন। গত
বৃহস্পতিবার তিনি হাটে গরুটি তুলে এটির দাম চেয়েছেন ৫০ হাজার টাকা। ৪৭ হাজার পর্যন্ত দাম উঠলেও
তিনি তা বিক্রি করেননি। গরু ব্যবসায়ী জানালেন, ভারতীয় গরু না আসায় এবার বেশি দামে গরু কিনতে হবে।
গতবছর যে গরুর দাম ছিল ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা এবার সে গরু ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকায় কিনতে হবে
বলে জানান তারা। দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে ক্রেতা এবং ব্যবসায়ীরা এখানে গরু কিনতে
আসেন।হাটের ইজারাদার মো আবুল কালাম আজাদ. জানান , ব্যবসায়ীদের আর্থিক নিরাপত্তার জন্য
প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথেষ্ট ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। গরু কিনতে আসা ক্রেতা আফিজ উদ্দিন মীর ও
সেলিম হহোসেন বলেন, হাটে প্রচুর আমদানি থাকা সত্তে দাম অনেক,তবে দাম যাই হোক কুরবানীর জন্য
গরু কিনতে হবে।
উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার মোঃ আবু তালেব প্রামাণিক জানান পশু সম্পদ কর্মকর্তাদের
সহযোগিতায় এই উপজেলায় যত গরু লালন পালন করা হয়েছে তা এই উপজেলার চাহিদা পূরণ করে দেশের
বিভিন্ন এলাকার চাহিদা পুরন করতে পারবে। শুধুমাত্র সুষম গো খাবার সরবরাহ করে এই অঞ্চলের গরু
মোটাতাজাকরণ না করার কারণে আত্রাইয়ে কুরবানীর পশুর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।