মো. আখলাকুজ্জামান, গুরুদাসপুর প্রতিনিধি.
প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও ঐতিহাসিক চলনবিলে বড় ধরণের বর্ষার আগমন দেখা না দিলেও স্বাভাবিক পানির
ওপর ঢেউয়ের সাথে দোল খেয়ে নৌভ্রমণ পিপাসুরা ঈদ আনন্দকে জমজমাট করে তুলেছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, পড়ন্ত বিকেলের মনমুগ্ধকর মিষ্টি বাতাস, মাথার ওপরে শুভ্র মেঘেদের ছুটে চলা, মাছ
রাঙ্গা পাখিদের ছোবল আর সড়কের কাছ ঘেসে জেলেদের খড়ার জালে মাছ ধরার দৃশ্য নজর কেড়েছে দূর-দূরান্ত
থেকে আগত নৌভ্রমণ পিপাসু দর্শনার্থীদের। প্রকৃতি ও সৈন্দর্যের সান্নিধ্য পেতে চলনবিলের এক
প্রান্ত থেকে অপরপ্রান্তে ছুটে চলেছেন আগত ভ্রমণ পিয়াসী মানুষ। এমনকি চলনবিল গর্ভে অবস্থিত
ঘাসি দেওয়ান পীরের মাজার ও খুবজীপুরের চলনবিল যাদুঘর পরিদর্শনের জন্য এসব ভ্রমণ পিপাসু মানুষগুলো
উৎসাহ উদ্দীপনায় যন্ত্রচালিত নৌকা অথবা স্পীডবোট নিয়ে ভ্রমণ করছেন। বহিরাগত পর্যটক ও
দর্শনার্থীরা যেকোন যানবাহনযোগে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের কাছিকাটা বা নয়াবাজার
পয়েন্টে নেমে এ ঐতিহাসিক চলনবিল পরিদর্শন করতে পারছেন।
ঐতিহাসিক চলনবিলকে আরো ঐতিহ্যমন্ডিত করার লক্ষ্যে বিগত ২০১০ সালে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার
সাথে গুরুদাসপুর উপজেলার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়। প্রায় ১৩ কোটি টাকা ব্যয়
বরাদ্ধে নির্মিত গুরুদাসপুর-তাড়াশ মৈত্রী সড়ক নির্মাণ করে দুই উপজেলার শতাধিক গ্রামের যোগাযোগ
ব্যবস্থার উন্নয়নে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। গুরুদাসপুরের চাঁচকৈড় গুমানী নদী থেকে
খুবজীপুর-বিলসা হয়ে প্রায় ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বিলসা বানগঙ্গা নদীতে দৃষ্টিনন্দিত দীর্ঘ ‘মা জননী
সেতু’ ও তাড়াশের কুন্দইল বাজার পূর্বপাশে দীর্ঘ ব্রীজ ও কালভার্ট নির্মানের মাধ্যমে মৈত্রী সড়কটি
গুরুত্ববহ ইতিহাস রচনা করেছে। তাই বর্ষা এলেই প্রতিদিনি হাজার হাজার আঞ্চলিক ও বহিরাগত ভ্রমণ
পাগল মানুষ মা জননী ও কুন্দইল সেতুতে ভীড় জমায়।
বিশেষ করে ঈদ মৌসুমে কিশোর-কিশোরী ও নববধুদের ভীড়ে এক সৌন্দর্যের পাহার গড়ে ওঠে ওই নয়নাভিরাম
এলাকায়। সেখানে সূর্যাস্তের দৃশ্য যেন পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজারকেও হার মানায়।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম দোলন জানান, আমরা প্রতিদিন হাজার হাজার ভ্রমণ পিপাসু নারী
পুরুষের সেবা ও নিরাপত্তা দিয়ে থাকি। কিন্তু সরকারী উদ্যোগে মা জননী সেতুর পাশে নির্মিত হয়নি
কোন পর্যটন কেন্দ্র। এতে করে বৈরী আবহাওয়ার সময় আমাদের আগত মেহমানদের কষ্টের সীমা থাকেনা।
আমি চলনবিলবাসীর পক্ষ থেকে একটি পর্যটন কেন্দ্র নির্মানের দাবী করছি।#