গাইবান্ধা থেকে শেখ হুমায়ুন হক্কানী ঃ ছাত্র নেই, যাতায়াতের পথ নেই,
বিদ্যালয়ের দৃশ্যমান কোন জমি নেই, খোলা মাঠের মধ্যে রাতারাতি টিনের ঘর
তুলে দেখানো হয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। রাতের আঁধারে এসব
ঘর তুলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে শিক্ষক নিয়োগ করে
লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে।
এরমধ্যে কিছু কিছু বিদ্যালয়ের ভাঙ্গাচোরা ঘরও নেই। এমন বিদ্যালয়ের
শিক্ষার্থীদের পাঠদান না করা হলেও মাত্র কয়েক মাস আগে ঘর তুলে ২০১০ সাল
অথবা তারও আগে প্রতিষ্ঠা দেখিয়ে ফুলছড়ি উপজেলায় অন্তত ৬০টি হঠাৎ
গজিয়ে ওঠা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অস্তিত্ব এখন কাগজে-কলমে পরিলক্ষিত
হচ্ছে।
উলেখ্য, একটি বিদ্যালয় খোলার জন্য সরকারি যেসব নিয়ম-নীতি রয়েছে তার
সামান্যতম কোন প্রক্রিয়া না মেনেই কেবল শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য করার
উদ্দেশ্যে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দেখানো হচ্ছে। উপজেলার নিভৃত পলী
এলাকায় রাতারাতি এসব প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য
করে জাতীয়করণের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। কতিপয় শিক্ষক,
রাজনৈতিক দলের স্থানীয় প্রভাবশালী কতিপয় নেতৃবৃন্দ এবং প্রাথমিক
শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তার যোগসাজসেই এই অপকর্মটি চালানো
হচ্ছে।
শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা গেছে, ২০১০ সাল থেকে বিদ্যালয়ের নিয়মিত
কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে এ মর্মে ২০১৫ সালে তিন দফায় ২৭টি
এবং ২০১৬ সালের আগষ্ট মাসে আরও ১৬টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের
পরিদর্শন রিপোর্ট প্রদান করে জাতীয়করণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠায়
উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় যাচাই বাছাই কমিটি। পরবর্তীতে জেলা
কমিটি সেসব বিদ্যালয়ের তালিকা পর্যালোচনা শেষে মন্ত্রণালয়ে চুড়ান্ত
অনুমোদনের জন্য পাঠায়।
উপজেলার উদাখালি কানিপাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর মাছের
ভিটা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব ডাকাতিয়া খেলিপড়ি
বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলকুঠি আদর্শ বেসরকারি প্রাথমিক
বিদ্যালয়, সর্দারপাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর ঝপঝপিয়া
বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর মন্ডলপাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,
উত্তর জিগাবাড়ি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রোজার ভিটা বেসরকারি
প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাইয়াপাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ইত্যাদি
বিদ্যালয়ের নাম পাওয়া গেছে।
এব্যাপারে ফুলছড়ি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুলাহিশ শাফী জানান,
২০১৫ সালে ২৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের জন্য পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া গত আগষ্ট মাসে নতুন আরও ১৬টি স্কুলের পরিদর্শন প্রতিবেদন
পাঠানো হয়েছে। ইতোপূর্বে এ উপজেলার ৫৬টি রেজিষ্টার বেসরকারি
প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১১টি কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় দুই ধাপে
জাতীয় করণ করা হয়।