গাইবান্ধা থেকে শেখ হুমায়ুন হক্কানী ঃ সরকারিভাবে লীজকৃত বাংলাদেশ
অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন বালাসী লঞ্চ ঘাটটি
সন্ত্রাসী কায়দায় জবর দখল করে নেয়া হয়েছে। বৈধ লীজ গ্রহিতাকে উচ্ছেদ
করে ওই ঘাট এবং ঘাট সংলগ্ন এলাকায় চলাচলকারি যাত্রীবাহি ও মালামাল
পরিবহনকারি নৌকা থেকে টোল আদায় করছে সন্ত্রাসীরা। এব্যাপারে
হাইকোর্ট প্রদত্ত নিষেধাজ্ঞার নির্দেশও উপেক্ষা করা হয়েছে। অথচ অজ্ঞাত
কারণে নির্বিকার পুলিশ কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে থানায় জিডি ও মামলা
দায়ের করা সত্ত্বেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। উপরন্ত ফুলছড়ি থানায়
লীজ গ্রহিতার বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা গ্রহণ করে হয়রানি
করছে পুলিশ।
মঙ্গলবার গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ইজারাদার শেখ সরদার
আসাদুজ্জামান হাসু এব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, রংপুর রেঞ্জের
ডিআইজি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট
প্রতিকার দাবি করেছেন এবং দখলদার সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবি
জানিয়েছেন। এছাড়াও ফুলছড়ি থানার দায়েরকৃত মামলাগুলো ডিবি
পুলিশের মাধ্যমে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তার বিরুদ্ধে
দায়েরকৃত মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে উলেখ করা হয়, ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকায় উত্তরে গিদারি এবং
দক্ষিণে কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের শেষ সীমানা (উড়িয়া পর্যন্ত) বালাসী লঞ্চ
ঘাটটি সরকার ইজারা দেয়। অথচ বেআইনীভাবে ফুলছড়ির কঞ্চিপাড়া
ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক মুন্না ইজারাকৃত এলাকায় গত
২০ মার্চ ২০১৬ তারিখে টেন্ডার নোটিশের মাধ্যমে দরপত্র আহবান করে
রেদওয়ান আশরাফ হোসেন পলাশকে লীজ দেন। এব্যাপারে ইজারাদার হাসু গত
১১ এপ্রিল ২০১৬ একটি রীট পিটিশন (যার নং ৪০৯৫/২০১৬) দায়ের করেন। এর
পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট রসুলপুর হালুয়াবাড়ি খেয়াঘাট ও সৈয়দপুর
খেয়াঘাট ২টি কোন ব্যক্তিকে ইজারা না দেয়ার জন্য মামলার প্রেক্ষিতে
হাইকোর্ট ইজারা স্থগিত করার জন্য আদেশ প্রদান করেন। হাইকোর্টের
আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ইউপি চেয়ারম্যান নোটিশের মাধ্যমে রেদওয়ান
আশরাফ হোসেন পলাশের লীজ বাতিল করেন।
এতদসত্ত্বেও সকল নির্দেশ অমান্য করে রেদওয়ান আশরাফ হোসেন পলাশসহ তার
সন্ত্রাসী বাহিনী বৈধ ইজারাদার হাসুর আদায়কারির কাছ থেকে
একাধিকবার হামলা চালিয়ে আদায়কারিদের নিকট থেকে ঘাটে আদায়কৃত
টাকা ও একটি মটর সাইকেল ছিনতাই করে নেয়। এছাড়াও ধারাল অস্ত্র নিয়ে
দু’দফা হামলা চালিয়ে তারা ইজারাদারের লোকজনদেরকে মারপিট করে তাড়িয়ে
দেয়। বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে অবহিত করাসহ ফুলছড়ি
থানায় পলাশসহ সন্ত্রাসী বাহিনীদের আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করা
হলেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না। উপরন্ত জেলা পুলিশের একজন উর্দ্ধতন
কর্মকর্তাসহ ফুলছড়ি থানার তৎকালিন অফিসার ইনচার্জ এর
সহযোগিতায় সন্ত্রাসীরা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তারা বৈধ ইজারাকৃত
ঘাট থেকে রাজিবপুর, রৌমারি, কর্ত্তিমারি, কুড়িগ্রাম জেলা, মোলারচর,
ফুলছড়ির এরেন্ডাবাড়ি, জিগাবাড়ি এবং সানন্দবাড়ি, বাহাদুরাবাদ,
সারিয়াকান্দি, জামালপুর জেলায় যাতায়াতকারি নৌকা থেকে বেআইনী
টোল আদায় চালিয়ে যাচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আব্দুল
কাদের সরকার, ময়নুল হক, মো. মোনা মিয়া প্রমুখ।