শেখ হুমায়ুন হক্কানী গাইবান্ধা থেকে ঃ গাইবান্ধা বাফার স্টক গুদামে স্থান
সংকুলানের অভাবে খোলা আকাশের নিচে ফেলে রাখা হয়েছে প্রায় ৪ হাজার মে.
টন ইউরিয়া সার। গত ৪ মাস ধরে ওইসব সার ওভাবে রোদে-বৃষ্টিতে পড়ে থেকে
গুণগত মান হারাচ্ছে। এ অবস্থায় বস্তার ভেতরে জমাট বেঁধে যাওয়া ওইসব সার
হাতুড়ি দিয়ে গুঁড়া করে রি-প্যাকিং করে তা ডিলারদের কাছে সরবরাহ করা হচ্ছে।
জমাট বাধা সার নিতে কৃষকদের আপত্তি থাকায় ডিলাররা ওইসব সার নিতে
আগ্রহী না হওয়ায় বাফার স্টক কর্মকর্তাদের সাথে তাদের প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ
হয়।
গাইবান্ধা বাফার স্টক সুত্রে জানা গেছে, বিএডিসির একটি সার গুদামকে
বাফার স্টকের গুদাম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। গুদামটির ধারণ ক্ষমতা মাত্র ২ হাজার
মে. টন। ঠাসাঠাসি করে এ গুদামে সর্বোচ্চ ৪ হাজার মে. টন সার রাখা যায়।
কিন্তু বোরো মৌসুমে এখানে ১৪ হাজার মে. টন পর্যন্ত সার মজুদ থাকে। এ
অবস্থায় বিকল্প কোন গুদাম না থাকায় পলিথিন দিয়ে ঢেকে গুদাম চত্বরে খোলা
আকাশের নিচে সার রাখতে হয়। বাফার স্টকে ৭ হাজার ৭১ মে. টন ইউরিয়া সার
মজুদ রয়েছে। এরমধ্যে প্রায় ৪ হাজার মে. টন গুদাম চত্বরে পলিথিন দিয়ে ঢেঁকে
রাখা হয়েছে।
এদিকে সংশিষ্ট নির্ভরযোগ্য একটি সুত্র জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন সার
কারখানায় উৎপাদিত ইউরিয়া সারের মান ভাল এবং এগুলো সহজেই জমাট বাধে না।
সৌদি আরব, মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং কাতার থেকে আমদানি করা
সারেরও মান যথেষ্ট ভাল। ২/১ বছরেও এগুলো জমাট বাধে না। কিন্তু চীন থেকে
আমদানিকৃত ইউরিয়া সার অল্পদিনের মধ্যেই জমাট বেঁধে যায়। এসব জমাট
বাঁধা সার কৃষকরা নিতে চায় না। এ কারণে ডিলাররাও এসব সার উত্তোলন করতে
চান না। এ নিয়ে স্থানীয় বাফার স্টক কর্তৃপক্ষের সাথে ডিলারদের প্রায়ই ঝগড়া
বিবাদের ঘটনা ঘটে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের গাইবান্ধা উপ-পরিচালক আ.ক.ম রুহুল আমিন জানান,
গাইবান্ধা জেলায় ১১১ জন সার ডিলার রয়েছেন। প্রত্যন্ত এলাকায় কৃষকদের মধ্যে
সার সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রত্যেক ইউনিয়নেই ডিলার নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
কোথাও কোথাও একাধিক ডিলারও রয়েছে।
বাংলাদেশ সার ব্যবসায়ি সমিতি গাইবান্ধা শাখার সাধারণ সম্পাদক সুদেব
চৌধুরী জানান, চীন থেকে আমদানিকৃত সার নিয়ে তারা বিপাকে পড়েন।
কৃষকরা জমাট বাধার কারণে এ সার নিতে চায় না। অনেক ডিলারের নিজস্ব
গোডাউনে জমাট বাধা সার পড়ে থেকে ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন। এব্যাপারে
বিসিআইসির কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের আপত্তির কথা একাধিকবার তারা
জানিয়েছেন। এমনকি তারা ধর্মঘটও করেছেন। তারপরও চীন থেকে সার আমদানি
অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, চীন থেকে আমদানিকৃত সার খোলা আকাশের
নিচে পড়ে থাকায় সব সারই প্রায় জমাট বেঁধে যায়।