ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার সুবর্ণসরা গ্রামের মনিরুজ্জামান মিঠু
হত্যা মামলার চাজসিটভুক্ত আসামীরা এখন প্রকাশ্যে চলাফেরা করছে। এ
মামলার তিন আসামী ইমরান হোসেন, আইয়ূব গাজী ও আকবর বিশ্বাস
জেল হাজতে থাকলেও বাকী ১৫ আসামী প্রকাশ্যে চলাফেরা করছে।
অনেক সময় স্থানীয় বাজারে ক্যাম্প পুলিশের সাথে আসামীদের আড্ডা দিতে
দেখা যায়। আসামীরা গ্রেফতার না হওয়ায় বাদী আক্কাচ আলীসহ তার
পরিবারের ৮ সদস্য দীর্ঘদিন ধরে গ্রামছাড়া। মামলা তুলতে অব্যাহত হুমকীর
মুখে বাদীসহ পরিবারের পুরুষ সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে
অভিযোগ।
বাদী আক্কাচ আলী লিখিত অভিযোগ উল্লেখ করেছেন, ২০১৫ সালের ১৯
ডিসেম্বর লুচিয়া গ্রামের মাঠে দিনে দুপুরে মনিরুজ্জামান মিঠু (৩৫)
কে আসামীরা কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। এ সময় মিঠু পুকুরে মাছের
খাবার দিচ্ছিলেন। নিহত মিঠু কালীগঞ্জ উপজেলার সুবর্ণসরা গ্রামের
আতিয়ার রহমানের ছেলে। এ ঘটনায় নিহতর ভাই আক্কাচ আলী বাদী হয়ে ১৮
জনকে আসামী করে কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
কালীগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই এসএম আশরাফুল আলম তদন্ত শেষে ২০১৬
সালের ৬ জুলাই আসামীদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জসিট দাখিল করেন।
আদালত থেকে আসামীদের নামে ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হলেও ৩ জন ব্যতিত বাকী
আসামীদের পুলিশ গ্রফতার করতে ব্যার্থ হয়।
শুধু মিঠু হত্যা নয়, আসামীদের বিরুদ্ধে যশোর কতোয়ালী থানায় সেশন
৮৩/১৬ ও কালীগঞ্জ থানায় জিআর ২২৫ নং মামলার ওয়ারেন্ট রয়েছে। বাইরে থাকা
আসামীরা দুধর্ষ বোমাবাজ ও বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত। গত ৩০
মার্চ বোমা তৈরীর সময় মিঠু হত্যা মামলার আসামী ইবাদুল নিহত হন।
ঝিনাইদহ ও যশোরের সীমান্ত হওয়ায় তারা দুই জেলায় অপরাধ কর্মকার্ন্ড
চালিয়ে যাচ্ছেন। অভিযোগ পাওয়া গেছে, মিঠু নিহত হওয়ার পর
সুবর্ণসরা পুলিশ ক্যাম্পে বিভিন্ন সময় আক্তার হোসেন, ইমদাদ হোসেন
ও অমল কুমার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু তারা
কেও আসামী গ্রেফতারের বিষয়ে আন্তরিক ছিলেন না বলে অভিযোগ।
এ সব পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে আসামীদের দহরম মহরম গড়ে ওঠায় তারা
পার পেয়ে যাচ্ছেন। আসামী অশোক মজুমদার ও সাক্কার বিশ্বাস সুবর্ণসরা
বাজারে প্রতিনিয়ত বসে আড্ডা দেয় বলে অভিযোগ।
এছাড়াও আসামী আত্তাপ, সরোজিৎ, নিরঞ্জন ঘোষ, ঝন্টু, একিন গাজী,
রবিউল, জামাল, নির্মল, ইমদাদুল, জালাল, টুরে মিন্টু, শামছুল ও অসীম ঘোষও
এলাকায় ঘোরাঘুরি করছেন।
এদের হুমকীতে বাদী আক্কাচ আলী, টিপু, রাজ্জা বিশ্বাস, ইদু, চকম আলী,
জিয়ারুল, নবো ও মামুন প্রায় ৭ মাস ঘরবাড়ি ছেড়ে পথে পথে ঘুরছেন।
তারা বাড়ি ফিরতে পারছেন না। বাড়ি ফিরলে মামলা তুলে নিতে চাপ দেওয়া
হচ্ছে।
এ বিষয়ে সুবর্ণসরা পুলিশ ক্যাম্পের বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা মহসিন
আলী জানান, আমি নতুন এসেছি। তাছাড়া আসামীদের অনেকেই হিন্দু
সম্প্রদায়ের লোক। পুজার মধ্যে তাদের আটক করলে বিতর্ক সুষ্টি হবে।
ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামীদের মাসের পর মাস প্রকাশ্যে চলাফেরার বিষয়টি নিয়ে
তাকে দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তিনি বলেন, আমার আগে আরো ৩ জন দায়িত্ব
পালন করেছেন, তারা কেন গ্রেফতার করেন নি আমি জানি না। আমি নতুন
এসেছি। তারপরও বিষয়টি নিয়ে আমি কালীগঞ্জ থানার ওসি স্যারের সাথে
কথা বলে পদক্ষেপ নেব।