শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:২৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
কবে হবে জাতীয় নির্বাচন, জানালেন প্রধান উপদেষ্টা কুমিল্লায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে বাসের ধাক্কা, নিহত ৩ মোরেলগঞ্জে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রশাসনের আয়োজনে ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলার উদ্বোধন জাতীয়তাবাদী রেলওয়ে শ্রমিক ও কর্মচারী দলের ৪৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন তারেক রহমান দেশে ফিরবেন কখন, যা বললেন মির্জা ফখরুল গুম-খুনে আর জড়াবে না র‍্যাব : মহাপরিচালক শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যক্রম সমর্থন করে না ভারতের মোদি সরকার সোনারগাঁয়ে দুটি চুনা কারখানার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিছিন্ন পাঁচবিবিতে জনবল সংকট ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে ক্যারিবিয়ান জয়ের পর তাসকিন-তাইজুল যা বললেন

আত্রাইয়ের হাট-বাজারে জৌলুশ নেই নরসুন্দরদের,

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় বুধবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৬
  • ১৬৩ বার পড়া হয়েছে

 

মোঃ রুহুল আমীন, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ হাট বাজারে রাস্তার পাশে বা

গাছতলায় বসে খৌরকর্ম করত নরসুন্দর বা নাপিতরা। কোন কোন এলাকায়

এদের শীল বলেও অবহিত করা হয়। পেশার ধরন পরিবর্তন হওয়া অনেক স্থানে এদের

দেখা যায় না। তবে যারা আজও আধুনিক সেলুনের ব্যবস্থা করতে পারেনি তারা

রয়ে গেছে রাস্তায় বা গাছ তলায়। আবার কেউ কেউ দক্ষতার অভাবে পুরনো

নিয়মে পেশাকে আকড়ে ধরে আছেন। এদের একজন নওগাঁর আত্রাই উপজেলার

ভবানীপুর গ্রামের বিমল চন্দ্র শীল কান্দুর। হাটে হাটে বসে পুরোনো দিনের

মতো চুল দাড়ি কামানোর প্রথাকে আঁকড়ে ধরে রুটি রুজির সন্ধানে আজও

ব্যস্ত সময় পার করছেন। হাটে হাটে প্রতিদিন যা আয় হয় তা দিয়ে চলে তার

সংসার। বিমল চন্দ্র শীল কান্দুর বলেন, আজও আমি গাছের নিচ থেকে উঠে

এসে বড় আয়না ঝুলানো দোকান দিতে পারিনি। তাই আজও বট বা বড় কোন

গাছের নিচে বসে বিভিন্ন হাট-বাজারে আপন মনে এই পেশা আঁকড়ে ধরে

আছি। যুব সম্প্রদায়ের কেউ আর তার কাছে এই পিড়েয় বা ইটে বসে চুল

দাড়ি কামাতে আসে না। সেলুনে যেতে যারা টাকার ভয় করে সেই মানুষগুলো

চুল দাড়ি কামানোর জন্য তার কাছে আসে।

আলাপচারিতায় উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের র্স্বগীয় রবি শীলের পূত্র গৌতম

শীল বলেন, আমি ছোট বেলা থেকেই ক্ষুর, কেচি নিয়ে বাবার হাত ধরে এ

পেশায় নেমে পড়েছি। এ পেশায় নিজেকে দক্ষ কারিগর হিসাবে গড়ে তুলতে

আর অভাবের সংসারের হাল ধরতেই লেখাপড়া করতে পারিনি। ছোট বেলা থেকে

অভাব অনটন সাথে নিয়ে কোন রকমে এই কাজ করে আজও বেঁচে আছি। এ

কাজে অনেকের ভাগ্যের অনেক পরিবর্তন হলেও তার ভাগ্যের কোন পরিবর্তন

হয়নি বলেও জানান তিনি। এ প্রজন্মকে উদ্দেশ্য করে উপজেলার ভবানীপুর

গ্রামের বাংলাদেশ রেলওয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল আজিজ জানান,

জমিদার আমলে হিন্দু সম্প্রদায়ের শীল পরিবারের সদস্যরা নরসুন্দর বা নাপিতের

কাজ করতো। জমিদার আমলে এ পেশার বৈশিষ্ট্য ছিলো রমরমা। তখন তারা হাট

বাজারে দল বেঁধে কাজ করতো। এলাকা ভেদে বিয়ের দিন বা আগের দিন বর ও

কনের বাড়িতে নরসুন্দরদের ডাক পড়তো। সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে তাদের

একটা অংশ গ্রহণ ছিল। কালের বির্বতনে নরসুন্দর পেশার এখন ধরণ বদলেছে।

রাস্তা ফুটপাত ও গাছ তলা থেকে উঠে এসেছে চক চকে দোকানের মধ্যে। এ

পেশায় আধুনিকতার ছোঁয়া লাগায় এখন আর সেই আগের দিনের মত এ

পেশার আর বাদ বিচার নেই। কোন বিশেষ শ্রেণীর মানুষ এখন আর এই পেশায়

নেই। বরং সকল সম্প্রদায়ের কেউ না কেই এ পেশায় জড়িয়ে পড়েছে। আধুনিক

সভ্যতার এ যুগে নরসুন্দরা তাদের সেই পুরানো পেশা পরিবর্তন করে

আধুনিকতার ছোঁয়া লাগায় তাদের জীবন ধারা অনেক পাল্টে গেছে। সেই

সাথে হাট বাজারে ফিড়েয় বা ইটের ওপর বসে নাপিতদের চুলদাড়ি কামানোর

পুরনো দিনের কর্ম প্রায় হারাতে বসেছে। তবে এখনও কোথাও কোথাও

ছড়িয়ে ছিটিয়ে হাট বাজারে তাদের কাজ করতে দেখা যায়। ছোট বেলায়

বাবার সাথে হাটে গিয়ে ফিড়েয় বা ইটে বসে চুল কেটেছি। আবার

নাপিতরা বাড়ি বা গ্রামের মহল্লায় এসে নির্দিষ্ট স্থানে বসে সবার চুল

দাড়ি কামিয়ে দিত। অনেকে নগদ পয়সা দিতো আবার অনেকে বছর ভিত্তিক

ফসল উঠলে তাদের ধান পাট গম ছোলা দিয়ে চুলদাড়ি কামানোর টাকা পয়সা

পরিশোধ করার রেওয়াজ ছিল।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451