গুরুদাসপুর প্রতিনিধি.
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক তায়জুল ইসলাম (৩৩) এর ওপর হামলা করে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে দিয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান শওকত রানা লাবুর ক্যাডার বাহিনী। সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসুচির ১০ টাকা কেজির চাল বিতরনে অনিয়ম নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করায় গত বৃহষ্পতিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে এঘটনা ঘটানো হয়।
ওই ঘটনায় শুক্রবার তায়জুল ইসলাম নিজেই বাদি ইউপি চেয়ারম্যান শওকতরানা লাবু ও তার সহযোগী মো. সুরুজ, সেকেন্দার আলী, মো. দুলাল, ফরিদ হোসেন, মো. আ.হান্নান, আ. মোমীন. মো. শহিদুল ইসলাম ও মো. বয়েনকে অভিযুক্ত করে গুরুদাসপুর থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন। এদের মধ্যে মো. দুলাল ও ফরিদ হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।এদিকে যুবলীগ নেতাকে হাত-পা ভেঙ্গে দেওয়া ও অনিয়মের অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর করা অন্য আটজনকেও হুমকী দেওয়ার প্রতিবাদে ও ইউপি চেয়ারম্যানসহ মামলার অন্য আসামীদের গ্রেফতারের দাবিতে গতকাল শুক্রবার শেষবিকালে নাজিরপুর বাজারে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদসভা করেছে ইউনিয়ন যুবললীগ। ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্নআহ্বায়ক জালাল শাহ এতে সভাপত্বি করেন।বক্তব্য রাখেন নাজিরপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি মো. আয়ুব আলী, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. আলাল শেখ ও উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক এস.এম. রাশেদ সরকার, ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারন সম্পাদক মো. আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা প্রমূখ।
বক্তরা বলেন, সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসুচির ১০ টাকা কেজির চাল বিতরণের তালিকায় বিত্তশালীদের নাম অর্ন্তভুক্ত করেন চেয়ারম্যান শওকতরানা লাবু। এই অনিয়ম নিয়ে যুবলীগনেতা তায়জুল ইসলামসহ নয়জন বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগদেন। অভিযোগের তদন্তের প্রেক্ষিতে ৭৭জন বিত্তশালীর নাম তালিকা থেকে বাদ দিতে বাধ্য হন চেয়ারম্যান লাবু। ওই ঘটনায় চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। গত বুধবার চেয়ারম্যান শওকতরানা লাবু নাজিরপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জনসভা ডেকে অভিযোগকারি নয়জনকে দেখে নেওয়ার হুমকী দেন। পরদিন বৃহষ্পতিবার যুবলীগ নেতা তায়জুল ইসলাম হামলার শিকার হন। এতে অন্য অভিযোগকারিরাও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।নাটোর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তায়জুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, বৃহষ্পতিবার নাজিরপুর বাজার থেকে ব্যাটারি চালিতভ্যানে বাড়ি যাচ্ছিলেন। চেয়ারম্যানের বাড়ির অদুরে দেলুরমোড় নামক স্থানে পৌঁছালে আসামীরা ভ্যানের গতিরোধ করে বেধড়কমারপিট শুরু করে। এক পর্যায়ে তাঁরা টেনে-হেঁচরে চেয়ারম্যানের বাড়ি সংলগ্ন গোপীনাথপুর স্কুলমাঠে নিয়ে তারা লোহার রড়, কাঠের বাটাম দিয়ে পিটায়। এসময় চেয়ারম্যান শওকতরানা লাবু ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। পরে সংঙ্গাহীন অবস্থায় তাকে নাটোর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পিটুনিতে তার বামহাত-বাম পা ভেঙ্গে গেছে। ডান পা জখম হয়েছে। তিনি ওই ঘটনার বিচার দাবি করেন।এব্যাপারে চেয়ারম্যান শওকতরানা লাবু দাবি করেন, তিনি ওই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। কী কারনে যুবলীগ নেতা হামলার শিকার হয়েছে তা বোধগম্য নয় তার। তবে রাজনৈতিক বিরোধের কারনে তিনিসহ তাঁর সমর্র্থকদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়েছে।গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলীপ কুমার দাস সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মামলার অন্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তবে চেয়ারম্যানের সম্পৃক্ততা থাকার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।