মো. আখলাকুজ্জামান,গুরুদাসপুর প্রতিনিধিঃ
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার প্রায় শতাধিক মাঠে রসুন লাগানোর জন্য কৃষকের মাঝে চলছে ব্যাপক
উৎসাহ উদ্দিপনা। রসুন লাগানোকে কেন্দ্র করে শস্য ভান্ডার খ্যাত দেশের বৃহত্তর চলনবিলাঞ্চলের পানি নামার
সাথে সাথে শুরু হয়েছে আমন ধান কাটার কাজ। সেই সাথে চলছে উঁচু জমিগুলোতে রসুন লাগানোর
প্রস্তুতি।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বয়স্ক থেকে শুরু করে নারী-পুরুষের পাশাপাশি ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরাও
লাইন বাই লাইন বসে জমিতে রসুন বীজ লাগাচ্ছেন। এ অঞ্চলে প্রতিবছরের মত এবারো রসুন ভাঙ্গার কাজে
ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন নারী-পুরুষ শ্রমিক। তারা প্রতি মন রসুন ভেঙ্গে মুজুরী পান ১৫০ থেকে ২০০ টাকা।
প্রায় দুই যুগ সময় ধরে এ অঞ্চলে বিনাচাষে রসুন চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন কৃষকরা।
রসুনের দরপতন ও লাগানোর পদ্ধতি ব্যাপারে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষক রবিউল করিম, শ্রী বিমল কুমার,
ফিরোজ আহমেদ সহ অনেকে জানান, গত বছরের চেয়ে এবার খরচ বেশি পড়লেও তারা জমিতে প্রচুর পরিমাণ
রসুন লাগাবেন। কারন জমির লীজ, সার এবং শ্রমিকের দাম এবার বেশি। রসুনের দর-পতনের ভয়ে একই জমিতে
তিন হাত পর পর সাথি ফসল বাঙ্গি ও তরমুজের জায়গা রেখে দেয়া হয়েছে। পানি নামার পর ধান কাটার ২/১
দিনের মধ্যে ধানের খড় তুলে জমি প্রস্তুত করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে কাঁদা শুকিয়ে গেলে রসুন লাগানো
যায় না। তাই কাঁদা জমির উপর প্রয়োজনীয় সার-কীটনাশক প্রয়োগ করা হচ্ছে। এরপর রসুন লাগিয়ে তার
ওপর ধানের খড় দিয়ে ঢেকে দিতে হয়। এর ৪/৫ দিনের মধ্যেই রসুনের চারা গজানো শুরু করে। সাথি ফসল
থাকায় এ অঞ্চলের কৃষকেরা প্রায় দুই যুগ ধরে রসুন চাষে ঝুঁকেছেন।
গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল করিম জানান, চলতি মৌসুমে নাটোর জেলার ৭ টি উপজেলায়
প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে রসুন চাষের লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে। অফিস আশা করছে এবার রসুন চাষ লক্ষ মাত্রাও
ছাড়িয়ে যাবে। এজন্য মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে এবং সর্বদা কৃষক ভাইদের
সহযোগিতা করছি।